মিসবাহ সামাদ,(সিলেট):
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দের ২৪ শে মে' বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে পিতা কাজী ফকির আহমদ ও মাতা জাহেদা খাতুনের ঘরে জন্মগ্রহন করেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম।শৈশবে ছিলেন অনেক চঞ্চল প্রকৃতির, বাল্যকালে তার পিতা মারা যান,যার ফলে পরিবারের হাল তিনি নিজের কাধেই তুলে নিয়েছিলেন মসজিদের মুয়াজ্জিন, রুটির দোকানে কাজ কিংবা লেটোর দলে কাজ সবই করেছেন পেটের টানে।
নজরুল খুব মেধাবী ছিলেন কিন্তু অভাবের কারণে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ার আগেই শিক্ষাজীবনের ইতি ঘটেছে। তারপর ভিবিন্ন পত্রিকায় সম্পাদক হিসেবে কাজ করেছেন।বাল্যকাল অতি দুঃখ কষ্টে কেটেছে বলে তার ডাক নাম ছিলো দুখু মিয়া।১৯১৭ সালে সেনাবাহিনীতে সৈনিক হিসেবে যোগ দেন এবং প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সৈনিক হিসেবে কাজ করেছেন।তার কবিতায় বিদ্রোহী মনোভাব থাকার কারণে তার বিরুদ্ধে তৎকালে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয় এবং দীর্ঘদিন কারাবরণ করেন।নজরুল এক হাতে বাঁশি আর অন্য হাতে রণতুর্য নিয়ে হাজির হয়েছিলেন।তিনি ছিলেন অত্যাচারিতের প্রতিবাদের মাধ্যম আর অত্যচারীর মুখোশ উন্মোচনের হাতিয়ার। ছিলেন সাম্যবাদনীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত সারাজীবন সাম্যের গান গেয়েছেন এবং এক হিন্দু রমনীকে বিবাহ করার মাধ্যমে সাম্যবাদীতার এক অনন্য উদাহরণ দিয়ে গেছেন।মাত্র বিয়াল্লিশ বছর বয়সে বাকরুদ্ধ হয়ে বিছানাশায়িত হয়ে পরেন তবুও তিনি থেমে যাননি বিছানায় থেকেও হয়েও লিখে গেছেন থেমে যাননি।
নজরুল কখনো মাথা নিচু করে বাচঁার নীতি শিখাননি নজরুল শিখিয়েছেন কিভাবে মাথা উচু করে বাচঁতে হয়।
'বলো বীর বলো উন্নত মম শির',
'শির নেহারি আমারি নতো শির'।
কিভাবে অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হয়,কিভাবে নিজেদের অধিকার আদায় করতে হয়, তার বিদ্রোহী কবিতাই তার বহিঃপ্রকাশ।
নজরুলই চিনিয়েছেন নিজেকে কিভাবে চিনতে হয় আমার "পথ প্রবন্ধ" যা নিজেকে চেনার পথ দেখিয়ে দেয়।
বিদ্রোহী,অগ্নিবীনাসহ খুকি ও কাঠবেড়ালির মতো বিখ্যাত কবিতা রচনা করেছেন,তাছাড়া যুগবানী ও ব্যথার দানের মতো প্রবন্ধসহ অসংখ্য গজল ও ইসলামি শ্যামা সংগীতেসহ অনেক গান রচনা করে গেছেন।বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে কবিকে স্বপরিবারে বাংলাদেশে আনা হয় এবং ১৯৭৬ সালে পূ্র্ণ নাগরিকত্ব প্রদান করা হয় মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কবি এদেশেই বাস করেন।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম পদ্মভূষণ,একুশে পদকসহ ভিবিন্ন দেশী বিদেশী সম্মাননায় ভূষিত হন।
১৯৭৬সালের ২৯শে আগষ্ট দুখু মিয়া চলে যান না ফেরার দেশে। কবির এক "কবিতায়" ইচ্ছাপোষন করে ছিলেন "যেনো তাকে মসজিদের পাশে দাফন করা হয়" তাই কবির ইচ্ছানুযায়ী তাকে দাফন করা হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে।
নজরুল বেচেঁ থাকবে তার বিদ্রোহী আর সাম্যবাদী কবিতায়,নজরুল বেচেঁ থাকবে তার প্রবন্ধ আর সংগীতে। যতদিন রবে বাংলা আর বাঙালি ততদিন বেচেঁ থাকবে নজরুল প্রতিটা প্রাণে প্রাণে।
ফিচার: বিদ্রোহী নজরুল।
Reviewed by সম্পাদক
on
শুক্রবার, নভেম্বর ২৩, ২০১৮
Rating:
Reviewed by সম্পাদক
on
শুক্রবার, নভেম্বর ২৩, ২০১৮
Rating:
