জেবা সামিহা,(রংপুর):
মাছ : বলি দুপুর গড়াচ্ছে আর এরা যে কই গেলো! যাই তীরের দিকটায় দেখে আসি।
দেখতে দেখতে তীরে এক পাথরে চোখ আটকে যায় তার।
মাছ:পাথরের কাছে ওটা কি দেখা যায়?
সেটা ছিল একটা কচ্ছপ।মাছটা প্রথমে আঁতকে উঠলো। পালাতে চাইলো কিন্তু পরক্ষনে ভাবলো শত্রু হলেও উপকার করা উচিত।
মাছ : ইয়ায়াহহ!!! বলি কত দিন ধরে এমন করে উল্টে আছো শুনি।
কচ্ছপ কোনো উত্তর দিচ্ছিলো না। দিবেই বা কিভাবে অজ্ঞানরত অবস্থায় কেউ কি উত্তর দেয়! কিন্তু মাছ তার নিজের মতো করে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অবশেষ এক ঘন্টার কঠিন পরিশ্রমের পর সে সোজা করলো।
মাছ : শুনতে পাচ্ছেন!!! এই যে!!!! এমা এ ত দেখি অজ্ঞান! এখন কি করি? খানিক জলের ছিটা দেই দেখি।
জলের ছিটা পেয়ে জ্ঞান ফিরছে কচ্ছপের। হাত পা নড়ছে
মাছ : কেমন লাগছে এখন?
কচ্ছপ : জল.. জল
মাছ কিছু জল এনে খাওয়ালো। কচ্ছপ ধীরে ধীরে কথা বলতে পারছে এবার।
কচ্ছপ : দুই গা পেরিয়ে যে ঐ যে বড় নদী আছে সেখানে থাকি। আমার সঙ্গী ডিম পাড়তে উপরে এসেছিলো। আমিও এসে ছিলাম তার সাথে। খাবার খুজতে গিয়েছিলাম এসে দেখি আমার সঙ্গী আগের যায়গাটায় নেই। আমি তাকে হন্ন হয়ে খুজছিলাম। খেয়াল করিনি খুজতে খুজতে কখন এই ধারে এসেছি। আর তার থেকেও বড় কথা আমার সামনে যে এত্ত বড় পাথর ছিলো তাও দেখিনি। আর তাতে
মাছ : ধাক্কা খেয়ে উল্টে পড়ে ছিলে, তাই তো?
কচ্ছপ : হ্যাঁ। বহুদিন উল্টে পরে ছিলাম। এত দিনে ভুলেই গেছি কতদিন পার হলো। কত চিৎকার করেছি। কেউ এসে সোজা করে দেয়নি। আর আমি ত নিজে সোজা হতে পারিনা। তুমি আমায় বাঁচালে। ধন্যবাদ তোমার উপকারের সামনে অতি তুচ্ছো।
মাছ : হয়েছে হয়েছে। থাক বাপু! বড্ড কথার ফুলঝুরি তোমার। আমি বাবা অতশত বলতে পারিনে। এখন নিজের পথখানা নিজে দেখো দিকিনি। আমি যাই আমার মেলা কাম আছে।
কচ্ছপ : তা তো বটেই।
এরপরের ঘটনা-
সন্ধ্যারদিকে নদীর ধারে কিছু মাছ চিৎকার করে একটা মাছকে খুঁজছে। চিৎকার শুনে কচ্ছপ গুটি গুটি করে এগিয়ে গেলো। কচ্ছপকে দেখে মাছগুলো দ্রুত সরে পড়লো। তাদের আর বুঝতে বাকি নেই যে তাদের আরেকজন কোথায়!
ছোটগল্প- অকৃতজ্ঞ ।
Reviewed by সম্পাদক
on
বুধবার, জানুয়ারী ০৯, ২০১৯
Rating:
