নতুন চাকরিতে যোগ দিয়েছি মাত্র এক দিন হলো।এরই মধ্যে কোনো কাজ হাতে এসে পড়েনি।যে এলাকায় আমার অফিস তার নাম হলো জগন্নাথপুর।আমি যোগ দিয়েছি নতুন ইলেকট্রিশিয়ান হিসেবে।আমি যেখানে থাকি জায়গাটা খুব ভূতুড়ে।কেমন জানি গা ছমছমে একটি ব্যাপার।নতুন চাকরি,তাও আবার জনমানবহীন একটি এলাকা,তাই হাতে তেমন কোনো কাজ নেই।আমার চাকরির দ্বিতীয় দিনের কথা।অফিসে বসে আছি।হঠাৎ রাতের বেলা একজন লোক এসে বলে-"ভাই আমার বাড়ির কারেন্টের মেইন সুইচটা নষ্ট হয়ে গিয়েছে।একটু দয়া করে ঠিক করে দিন তো।"আমি ভাবলাম হাতে যেহেতু তেমন কোনো কাজ তাহলে যায়।আমি লোকটিকে বললাম-"বেশ,চলেন তাহলে।কী করা যায় দেখি?"লোকটার সাথে গড়িমসি না করে অফিস থেকে বেড়িয়ে পড়লাম।কিছুক্ষণের মধ্যে লোকটার বাড়িতে গিয়ে হাজির হলাম।লোকটার বাড়ির নাম-অপটিমক্স হাউস(স্থাপিতঃ১৮৭২)।নামটি দেখে কিছুটা অবাক হলাম।লোকটার সাথে ঘরের ভিতরে গেলাম।লোকটি বলল-"আপনি বসুন,আমি ভিতর থেকে আসছি।"লোকটা তার ঘরের বাথরুমের দিকে গেল।হঠাৎ অনেক জোরে একটি শব্দ হল এবং পুরো ঘর ঘোর অন্ধকার হয়ে গেল।আমি লোকটাকে ডাকলাম।কিন্তু কয়েকবার ডাকার পরেও কোনো সাড়াশব্দ পেলাম নাহ।পকেট থেকে টর্চলাইট টা নিয়ে বাথরুমের দিকে হাটা শুরু করলাম।শব্দটা ওইদিক থেকেই এসেছিল।গিয়ে যা দেখলাম,তাতে আমার পুরো শরীর কেঁপে উঠল।
বাথরুমের পুরো মেঝেতে রক্ত পরে আছে।আমি সেখান থেকে দ্রুত দরজার সামনে এলাম।বের হবার জন্য দরজা ধাক্কা দিলাম কিন্তু দরজা বাইরে থেকে বন্ধ।হঠাৎ দেখলাম বাইরে জানালার পাশে অদ্ভুত একজন লোক দাঁড়িয়ে আছে।লোকটিকে বললাম-"ভাই,আমাকে এখানে একজন লোক আটকে রেখেছে।দয়া করে বের করেন আমাকে এখান থেকে।"লোকটি কিছুই বললনা।হঠাৎ পিছন থেকে কিছু একটা পড়ার আওয়াজ শুনতে পাই।পিছনে তাকিয়ে দেখি কিছুই নেই।দেখি জানালার পাশে লোকটাও কোথায় উধাও হয়ে গিয়েছে।এমন সময় সিঁড়ি দিয়ে কেউ একজনের আসার আওয়াজ অনুভব করতে পারি।দেখি একজন বিশাল দেহী লোক,বড় বড় চুল,অদ্ভুত মুখের গঠন এবং নাক দিয়ে রক্ত পড়ছে আমার দিকে এগিয়ে আসছে।এরপর আমার আর কিছু মনে নেই।সকালে নিজেকে আবিষ্কার করি হাসপাতালের বিছনায়।পাশেই কয়েকজন পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে।তারা বলল আমাকে নাকি কালকে রাতে যে বাড়িটি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে,ওখানে নাকি এক সপ্তাহ আগে একটি লোক খুন হয়।তারা সেখান থেকে একটি লাশ পায়।আমি লাশটি দেখতে চাইলে তারা আমাকে দেখায়।আমি দেখলাম যে লোকটি কালকে রাতে আমার কাছে উনিই।আমি রাতের ঘটনাটি তাদেরকে খুলে বললাম।তারা কেউই কোনোভাবে বিশ্বাস করতে চাইলনা।করবেই বা কেমন করে?আমার কাছেও তো এখনো সব স্বপ্নের মতো অবিশ্বাস মনে হচ্ছে সবকিছু।শরীরে কেমন জানি এক রহস্যময় শিহরণ বয়ে গেল।
