মোঃ মোশফিকুর রহমান,(নীলফামারী):
অনেক অনেক দিন আগের কথা, পস্কন গ্রহের আকাশে সম্রাট মর্কজা তার ছোট্ট ছেলে ইস্কুটকে নিয়ে খেলছিলেন! হঠাৎ করেই একটা ধুলোর ঝর এসে সবকিছু ওলটপালট করে দিলো, পিতার সাথে সংযোগ বিছিন্ন হয়ে ইস্কুট পৃথিবীর বুকে ছোট্ট একটি দেশ ভিন্ন জগতে এসে পড়ে গেল! এই রাজ্যে শুধুমাত্র পরীদের বাস, ইস্কুট যেদিকে চেয়ে দেখে শুধু পরী আর পরী! ইস্কুট তার মতো কিশোর কোথাও খুজেঁ পেলনা। সে ভয়ে বারবার, তার হাতের ডিভাইসটাতে তার বাবার সাথে বারবার যোগাযোগের অনেক চেষ্টা করল, কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হলো না!
ইস্কুট যার কাছেই সাহায্য চাইছে, তারাই ভয়ে পালিয়ে যাচ্ছে অথবা তাকে তাড়া করছে! ইস্কুট কি করবে, কোথায় যাবে ভাবতে পারছে না! এমন সময় ছোট্ট একটা পরী তার সামনে এসে হাত বাড়িয়ে দিল! বললো আমি রূপা, তুমি কে?
-আমি ইস্কুট, পস্কন গ্রহ হতে বিছিন্ন হয়ে তোমাদের রাজ্যে এসেছি!
রূপা'র ইস্কুটকে প্রথম দেখায় অনেক ভাললাগে, সে ইস্কুটকে সাহায্য করবে বলে কথা দিলো!
রূপা ইস্কুটের কথা তার মাকে বলল, সে তার মায়ের সাহায্য কামনা করল! কিন্তু তাকে সাহায্য না'করে তার মা পরীর সম্রাজ্ঞীকে বলে দিলো, পরী ঘোষণা করল যে ভিনগ্রহের ওই কিশোরকে যে ধরে দিতে পারবে তাকে এক লক্ষ স্বর্ণমূদ্রা দেয়া হবে! গোটা পরী'র রাজ্যে পুরস্কার পাওয়ার আনন্দ বিরাজ করছে! সবাই ইস্কুটকে ধরতে উঠে পরে লাগলো! যে করেই হোক এই ভিন্ন গ্রহের মানুষকে তাদের ধরা চাই-ই চাই। রাজ্যের সর্বত্র বারবার প্রচার করা হচ্ছে, ভিন্ন গ্রহ হতে আজব এক প্রানী এসেছে যা আমাদের পরী রাজ্যের জন্য হুমকী স্বরূপ! একে যেকোনো মূল্যে ধরতেই হবে।
উপায় না পেয়ে রূপা ইস্কুটকে জঙ্গলে লুকানোর পরামর্শ দিলো। সে তার উপকারের চেষ্টা করবে, এবং সে যেন কোন ভয় না পায়। সে ইস্কুটকে রক্ষার সব রকম চেষ্টাই করবে বলে কথা দিলো। এটাও বললো সে যেন পরীদের হাতে ধরা না পরে, তাহলে নিশ্চিত পরীদের রানী তাকে আগুনে পুড়ে ভর্তা বানিয়ে খাবে।
ইস্কুটের অবস্থা কাহিল, সে দু'দিন হতে জঙ্গলে লুকিয়ে লুকিয়ে গাছের লতাপাতা খেয়েদেয়ে দিন কাটাচ্ছে! কিন্তু রূপার আর কোন হদিস নেই! ইস্কুটের মনে আর কোন সংশয় নেই, এবার তাকে নিশ্চিত পরীদের রানীর ভর্তা হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায়-ই নেই। কান্নায় তার চোখ বেয়ে পানি পরতে শুরু করছে। জীবনের হয়তো অন্তিম মূহুর্তে সে দাড়িয়ে আছে! এ বিপদ হতে তার বাঁচার আর কোনো উপায় নেই। এমন সময় খুজঁতে খুজঁতে রূপার আগমন, হাতে একটা তাঁরা! এসেই বলল চলো, তোমাকে তোমার গ্রহে রেখে আসি! এই দেখ মায়ের যাদুর দন্ড চুরি করে এনেছি, এর সাহায্যে তোমাকে উড়িয়ে নিয়ে তোমার গ্রহে রেখে আসব! যেই বলা সেই কাজ, রূপা তার হাতের তাঁরার দন্ডটাকে কি যেন বলল, দুজনই উড়তে লাগলো! আর তাদের ধরতে পিছনে হাজারো পরী জাদুর জাল নিক্ষেপ করতে লাগলো, উল্টো দিক হতে রূপাও পাল্টা জাদুর বান ছুড়েছে একটু পরপর! একটু পরেই যখন তারা মধ্য আকাশে পৌঁছে গেল ঠিক তখনই ইস্কুটের হাতের ডিভাইসটাও একটু একটু কাজ করতে শুরু করতে লাগলো। ইস্কুট বুঝলো তারা তার গ্রহের হয়তো খুব কাছাকাছি চলে এসেছে। আরও কিছু সময় পরে ইস্কুটের ডিভাইসটা পুরোপুরি কাজ করতে শুরু করলো। এবার শুরু হলো পাল্টা আক্রমণ, পরীরাও তাদের ধরতে বারবার জাদুর জাল নিক্ষেপ করতে থাকলো কিন্তু একসময় পরীদের পরাজিত করে সব বাধা পেরিয়ে তারা পস্কন গ্রহে প্রবেশ করল! ছেলেকে ফিরে পেয়ে সম্রাট ভীষণ খুশি এবং রূপা'র সাহসিকতা ও রূপে মুগ্ধ হয়ে তার ছেলে ইস্কুটের সাথে বিয়ে দিলো! এরপর ইস্কুট ও রূপা পস্কন গ্রহে সুখের সংসার করতে লাগলেন।
অণুগল্প: ইস্কুট ও রূপার সংসার
Reviewed by সম্পাদক
on
বৃহস্পতিবার, জুলাই ১৮, ২০১৯
Rating:
Reviewed by সম্পাদক
on
বৃহস্পতিবার, জুলাই ১৮, ২০১৯
Rating:
