-->

ফিচার: টুকরো কিছু কথা।



সানজিদ আহমেদ তিয়াস,(বগুড়া):

১ - সকাল থেকে ভাবছি চকবাজার ট্রাজেডি নিয়ে কিছু লেখবো। কিন্তু সাহস পাচ্ছিই না কেন জানি। কি লেখবো? কিভাবে লেখবো? রিয়া-রিফাত এর পরিবার টা যে মূহুর্তে ধুলোই মিশে গেল। দুই ভাই জীবন দিয়েও বাঁচাতে পারলো না পৃথিবীর এক নতুন মুখ কে। চার বন্ধুর আড্ডা টা যে আর কোন দিন ও জমবে না। ছোট্ট শিশুর টার জন্য নিয়ে আসা বিরিয়ানি গুলো কাকে খাওয়াবে বাবা টা এখন?? ছেলের এক টুকরো মাংস চেয়ে আহাজারি করা মা টা রাতের অন্ধকারে কি করবে এখন? এগুলোর কোন উত্তর আছে? নাই !

জাতি হিসেবে আমরা অত্যন্ত নির্বোধ, সচেতনতা বলতে কিছুই বুঝি না আমরা। বিশ কদম হেঁটে ওভারব্রীজ ব্যবহার করার থেকে চলন্ত গাড়ির রাস্তা পার হওয়া বেশি সহজ আমাদের কাছে। ১০ মিনিট জ্যামে আটকে থাকার চাইতে ফুটপাতে মোটরসাইকেল তুলে দিয়ে পার হয়ে আসা টা বুদ্ধিমানের কাজ আমাদের কাছে । কাউকে ঠকিয়ে কিছু আদায় করাকে যে জাতি বুদ্ধিমানের কাজ বলে, যে জাতি একটু কষ্ট করার চাইতে জীবনের ঝুকি নেয়া টা কে সাহসের কাজ বলে। আর যা-ই হোক সে জাতির মঙ্গল হবে না। সচেতনতা কখনো আমাদের কে ছুঁতে পারেনি। এমন ঘটনা আমাদের সাথে ঘটবে না তো কাদের সাথে ঘটবে?

২ - সুবোধ! তুই চিন্তা করিস না। কোন একদিন এই ছোট্ট সবুজ ভূখণ্ড টা একদম পাল্টে যাবে। পাল্টে যাবে এখান কার জীবন যাত্রা। গলা উচিয়ে সুশীল সুশীল করে চিল্লানো আজকের মানুষ গুলা; যাদের কারনে আজ অভাবের তাড়নায় মানুষ গলায় দড়ি দেয়, একমুঠো ভাতের জন্য বুড়ো মানুষ টা দাঁতের জোরে রিকশা চালায়, খুধার জ্বালায় ড্রেন থেকে খাবার তুলে খায়! যারা বিশাল অর্থ ভুরির উপরে দেশপ্রেমের ছাপ লাগিয়ে সুশীল সুশীল বলে গলা ফাটা ভাষন দিয়ে শয়তানি হাসি হাসতে হাসতে বিরিয়ানী গেলে৷ তাদের কে সেদিন যায়গা দেয়া হবে ঘৃনার মিউজিয়ামে। তাদের প্রতিকৃতি তে জুতো মেরে বরণ করা হবে প্রতিটা সকাল৷ তাদের নামে তৈরি করা হবে ডাস্টবিন,যেখানেতুই অবাধে থুথু ফেলবি৷ তুই না হয় সেদিনই বুকে হাত দিয়ে লাল সবুজ পতাকা টার সামনে দাঁড়িয়ে বলিস "আমার সোনার বাংলা,আমি তোমায় ভালোবাসি।

৩- বর্তমানে নিউজ ফিড বা টিভি তে নিউজ দেখতে বসলে প্রতিনিয়ত একটা নিউজ থাকবেই,সেটা হলো ধর্ষন। আচ্ছা কতটা নিচে নামলে মানুষ এই কাজ টা করতে পারে? কতটা নিচে নামলে মানুষ একটা মেয়ের জীবনে এমন কিছু অপবাদ যুক্ত করে দিতে পারে যা সেই মেয়ে টার মনে পড়া মাত্র সে মরে যায়। এভাবে মেয়েটা প্রতি দিন প্রতিনিয়ত হাজার বার মরতে থাকে মেয়েটা।আর সেই ধর্ষক রা বুক উচু করে ঘুরে বেড়ায়। আসলে মানুষ আজ ক্ষমতা আর টাকার জোরে ভেতরের মানুষত্য কে খেয়ে ফেলেছে।অসুস্থ মানুষত্বের কারনে সমাজ দুর্বল হয়ে পড়েছে।  আচ্ছা, আপনি ধর্ষক আপনি ক্ষমতাবান মানুষ কিন্তু আপনার মা কে যদি কেউ ধর্ষন করতো আর আপনাকে যদি সবাই ধর্ষিতা নারীর সন্তান বলে পরিচয় দিতো তাহলে আপনার ক্যামন লাগতো? মানুষের বিবেক আজ মানুষের কাছেই পিষ্ঠ আর মানুষত্য কুকরে জির্ন শির্ন হয়ে গেছে।আর যে দুই চার জনের বিবেক,মানূষত্য আছে তারাও ঐ মানুষত্যহিন দের ভয়ে কিছু বলতে পারে না।সেই নরপশুদের ভয়ে নিজের বিবেক,মানুষত্য কে হত্যা করতে বাধ্য হয় ভালো মানুষ গুলো। বাহ!  কি ক্ষমতা আমাদের....
ফিচার: টুকরো কিছু কথা। ফিচার: টুকরো কিছু কথা। Reviewed by সম্পাদক on রবিবার, মার্চ ১০, ২০১৯ Rating: 5
Blogger দ্বারা পরিচালিত.