মিসবাহ সামাদ,(সিলেট):
বৃদ্ধাশ্রম আমাদের সমাজে বর্তমানে অতি প্রচলিত প্রতিষ্ঠান ।আমাদের দেশসহ বিশ্বের ভিবিন্ন দেশের অবহেলিত বৃদ্ধ মা-বাবার শেষ জীবনের একমাত্র আবাসস্থল। সভ্যতার অগ্রযাত্রার সাথে সাথে আধুনিক সভ্য যুগে বাবা-মা বৃদ্ধ হয়ে গেলে সন্ততানরা মা-বাবাকে রেখে আসে বৃদ্ধাশ্রমে। এটা কি সভ্য মানুষকে বাহবা দেওয়ার মতো কোন কাজ? নিশ্চয়ই সকলে গলায় গলা মিলিয়ে বলবেন অতি জগন্য কাজ। বর্তমানে বেশিরভাগ উচ্চ-শিক্ষিত ও চাকরীজীবীদের মা-বাবাদের শেষ আবাসস্থল হয় বৃদ্বাশ্রমে। প্রত্যেক মা-বাবাই স্বপ্ন দেখেন তার সন্তান লেখাপড়া করে মানুষের মতো মানুষ হবে, শেষ বয়সে ছেলের কাধে চড়ে কবর পর্যন্ত যেনো পারেন এটাই সকলের চাওয়া থাকে। কিন্তু এই কি তাদের শিক্ষা? বাড়ির এক কোণেও কি মা বাবার জায়গা হয় না নাকি সু-শিক্ষার অভাব? বস্তির রিকশাওয়ালা ছেলেটাওতো সারাদিন রিকশা চালিয়ে উপার্জন করে মা-বাবার মুখে অন্য তুলে দেয়। বৃদ্ধাশ্রমে গিয়ে বুড়ো মানুষগুলোকে গিয়ে যদি জিজ্ঞেস করা হয় আপনার ছেলে কি করে উত্তরে তারা বলবেন আমার ছেলে ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার, চাকুরিজীবি, আমলা,ওরা কি শিক্ষিত নাকি অমানুষ? তবুও মা-বাবা গর্ব করে বলেন একটুকু অভিশাপ দেন না।মা বাবা কি এতোই অবহেলার জিনিস যে বুড়ো হয়ে গেলেই তাদের ছুড়ে ফেলে দিতে হবে। আজ সন্তান মা বাবাকে বোঝা মনে করে কিন্তু সন্তানরাই তো এক সময় মা-বাবার বোঝা ছিলো তবুও তো তারা তাদেরকে ফেলে দেয়নি। তবে আজ বৃদ্ধাশ্রমের আমদানী কেনো আজ? সন্তানদের টাকা পয়সা,বাড়ি,গাড়ি সবই আছে কিন্তু তাদের মা-বাবার সেবা যত্ন করার মতো সময় নেই এই দোহাই দিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেয়।
বৃদ্ধাশ্রমের প্রয়োজন নেই তা বলছি না বিশেষক্ষেত্রে প্রয়োজন আছে।
আমাদেরকে এ ঘৃণ্য প্রথা থেকে বের হয়ে আসতে হয়ে আসতে মা-বাবার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত করতে হবে।যারা মা-বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসেন তারা কি একবারো চিন্তা করে দেখেছেন তাদের বৃদ্ধ বয়সে কি পরিণতি হতে যাচ্ছে?তাদের সন্তানরাও নিশ্চয়ই ঠিক একই কাজ করতে দ্বিধা করবে না। কেননা তারা এসকল কুকর্ম নিজ চোখে দেখে বড় হয়েছে।সময় থাকতে যদি সচেতন না হন তাহলে যেমন কর্ম তেমন ফল তো হবেই।তাই আমাদের উচিত বৃদ্ধাশ্রমকে না বলা। মা-বাবাকে নিয়ে শান্তিতে একই পরিবারে বাস করা।আমাদের ভূলে গেলে চলবেন এই মা-বাবাই আমাদের জন্য তাদের জীবনের সেরা মুহুর্তগুলো ত্যাগ করেছেন, তাদের হাতে হাত ধরেই আমরা প্রথম হাটতে শিখেছি, তাদের সাহায্য প্রথম কথা বলা শিখিয়েছেন। এ ঋণ কভূ শোধ করার নয় তাদের শেষ জীবনে যদি একটু সেবা যত্ন করে সন্তুষ্ট করা যায় তাহলেই ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তি লাভ সহজ হবে।বৃদ্ধাশ্রম একটি সামাজিক ব্যাধি এর বিরুদ্ধে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার দরকার, সাংবাদিক,শিক্ষক,ডাক্তার,ইঞ্জিনিয়ার-সহ সকলের উচিত এর বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করা।
চাই না আর কোনো বৃদ্ধাশ্রম। চাই পরিবর্তন।
Reviewed by সম্পাদক
on
শনিবার, ডিসেম্বর ০১, ২০১৮
Rating:
